১০ টি ভালো অভ্যাস

১০ টি ভালো অভ্যাস আপনাকে সফল হতে সাহায্যে করবে

আমরা সবাই চাই জীবন কে সফল করতে তবে পারিনা কারণ আমাদের অভ্যাস এটা করতে দেয় না। ১০ টি ভালো অভ্যাস আপনাকে সফল হতে সাহায্য করবে।এই অভ্যাসগুলো ফলো করুন রেগুলার সফলভাবে, দেখবেন আপনার উন্নতি এমনিতে হবে।

অনেকে মনে করে থাকেন সফলতা হলো কিছু নিদিষ্ট লক্ষ্য পূর্ণ করা আসলে এমনটা হয় না। সফলতা পেতে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের ছোট ছোট ভালো অভ্যাস গড়ে তুলা অতি গুরুত্বপূর্ণ। কথায় আছে ভালোর সাথে স্বর্গ বাস, খারাপের সাথে সর্বনাশ। ভালো অভ্যাস আমাদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্যে করে এবং কাজের গুণগত মান বাড়াতে সাহায্যে করে থাকে।

এই ব্লগ পোস্টে আপনাদেরকে ১০ টি এমন অভ্যাস সাথে পরিচয় করে দিবো যা আপনার জীবন কে গুছিয়ে তুলতে সাহায্যে করবে।

অভ্যাস মানুষকে পরিবর্তন করতে সাহায্য করে?

আপনার পরিবর্তন আসবে আপনার অভ্যাসে।মানুষের শারীরিক সৌন্দর্যের আসে খাবার এবং ব্যায়ামে। আপনি যত ব্যায়ম করবেন ততই আপনার শরীরের অঙ্গ শক্ত হবে। খাদ্য আপনাকে শক্তি যোগাতে সাহায্য করবে এবং আপনাকে মানসিক ভাবে শান্তি দিবে।

অভ্যাস কেন মানুষকে সাহায্য করে? আমাদের শরীর কারও না কারও সাহায্যে নিয়ে গঠিত হয়েছে,হাতের কাজ ভিন্ন, চোখের কাজ ভিন্ন, ঠোঁটের কাজ ভিন্ন পায়ের কাজ ভিন্ন, কানের কাজও ভিন্ন আমাদের প্রতিটা অঙ্গ ভিন্ন ভিন্ন ভাবে কাজ করে থাকে। আমাদের এই সব অঙ্গের কারণে আমরা একজন সুস্থ মানুষ বলতে পারি। এই অঙ্গ কারও সাথে বিচ্ছিন্ন হলে আপনার শরীরের একেকটা জিনিস নষ্ট হয়ে যাবে। কানে সমস্যা হলে আপনি শুনতে পারবেন না, পা’য়ে সমস্যা হলে আপনি হাটতে পারবেন না।

একেকটা অভ্যাস মানুষের সাথে জড়িত, আমরা রাতে ঘুমায় এটাও আমাদের অভ্যাস, আমরা সকালে ঘুম থেকে উঠি এটাও একটা অভ্যাস। ভালো খারাপ সব মিশিয়ে আমাদের অভ্যাস। এখন কথা হলো আপনার কোন অভ্যাস আছে, কোন অভ্যাস আপনাকে পরিবর্তন নিয়ে আসবে সহজে। আমরা যেভাবে অভ্যাস তৈরী করবো সেই ভাবে চলবে আমাদের জীবন।

আপনি যদি সোশাল মিডিয়া আসক্ত হন একদিন মেবাইল ব্যাবহার না করলে আপনি পাগলের মতো হয়ে যাবেন। কারণ এটা আপনার অভ্যাস, অভ্যাসকে আপনি স্থান দিয়েছেন রেগুলার জীবনে।

অভ্যাস আপনার জীবনে নিয়ে করেছে কন্টোল, আপনি আপনার জীবনকে কন্টোল করতেছেন না অভ্যাস আপনার জীবনকে করতেছে পরিচালনা।

১০ টি ভালো অভ্যাস আপনার জীবনকে পরিবর্তন করতে সাহায্যে করবে?

জীবন যুদ্ধে হার না মানতে চাইলে শুরু করুন ভালো অভ্যাস গড়ে তুলুন নতুন অভ্যাস।নতুন অভ্যাস আপনাকে নিয়ে যেতে পারে ভালো একটা স্থানে। আপনি চাচ্ছেন এমন কোন অভ্যাস যা আপনাকে পরিবর্তন আনতে সাহায্যে করবে তাহলে এই অভ্যাস গুলো আপনার জন্য।

সকালের ডেইলি রুটিন:

সৃষ্টির সেরা জীব মানুষ। সৃষ্টির সব কাজ শুরু হয় সকালে তবে বেশিরভাগ মানুষ ভোর দিয়ে তাদের জীবন শুরু করতে পারে না। সেরা জীব হয়েও তারা সকাল সকাল ওঠতে পারে না, মুরগী, কুকুর, কাক সকাল সকাল বাহির হয়ে যায় তারা জানে আল্লাহ দেওয়া সকালকে কি করে উপভোগ করতে হয়।

তাইতো তারা সুস্থ সবল বেশি থাকে। সকালে ঘুম থেকে উঠা অনেক জরুরী। আপনি পুরো দিন কেমন যাবে এটা নির্ভর করে সকালের কাজের উপর। আপনি সকালে ঘুম থেকে উঠে ৯০ মিনিটে যে কাজটা শেষ করতে পারবেন, সেই কাজ দিনের অন্যা সময়ে করতে গেলে আপনার বেশি সময় লাগবে। সকালে আমাদের মন ফ্রেশ থাকে যা কাজ করতে আমাদের উৎসাহিত করে।

সকাল ভালো গেলে পুরো দিনটা যে ভালো যাবে। সকালে ঘুম থেকে উঠে আপনি বই পড়তে পারেন,আপনি ডেইলি রুটিন এর যত কঠিন কাজ আছে সেটা সকালে শুরু করতে পারেন।

মনে করুন আপনি একটা নতুন বিজনেস শুরু করবেন, সেই বিজনেস এর জন্য রিসার্চ করার কাজটা সকাল করতে পারেন। সকালে মানুষের মন ফ্রেশ থাকে বেশি। দিনের কঠিন কাজটি শুরু হোক সকাল বেলা।

শুধু এই কাজটা নই, সকাল থেকে রাত ১১ টা পর্যন্ত আপনি কোন কাজটি করবেন সেটার রুটিন তৈরি করে রাখতে পারেন। এই রকম একটা রুটিন থাকা মানে আপনার গোলের কাছাকাছি রাস্তায় আছেন। সকালের একটা ভালো রুটিন আপনার কাজের গতিকে বাড়াতে সাহায্যে করে।

নিয়মিত ব্যায়াম করা:

আহার করো সময় মতো, ব্যায়াম করো নিয়মিত।মানুষের ভালো একটা অভ্যাসের মধ্যে ব্যায়াম হলো তার মধ্যে একটি। বাজে অভ্যাস পরিহারের জন্য আপনার শরীরের পেশী শক্ত করতে সাহায্যে করে।নিজেকে মানসিক ভাবে শক্ত রাখতেও সাহায্য করে। ডেইলি ৩০ মিনিটে এর ব্যায়াম আমাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যর জন্য গুরুত্বপূর্ণ।ব্যায়ামের অনেক বড় ভূমিকা আছে আমাদের এই জীবনে।

খারাপ অভ্যাস পরিহার করতে চান তাহলে ব্যায়াম করুন রেগুলার।ব্যায়ামের জন্য আপনাকে জিমে যেতে হবে না। বাড়িতে বসেও বিভিন্ন রকমের ব্যায়াম করতে পারেন। ব্যায়ামের জন্য বিভিন্ন ইউটিউব চ্যানেল ফলো করতে পারেন।

পানি পান করা:

আমরা পানি বেশি পান করতে চাই না। পানি বেশি পান করলে আপনার শরীরে একটা এনার্জি সৃষ্টি হয়। গাড়ি চলে তেলে মানব শরীর চলাচল করে পানিতে এটা বললল ভুল হবে না। এখন বলতে পারেন মানুষের শক্তি উৎস খাবার, হ্যা খাবার তবে এটাকে হজম করে প্রয়োজন পানি।

প্রতিদিন ৮-১০ গ্লাস পানি পান করলে আমাদের শরীরের ডিটক্সিফিকেশন প্রক্রিয়াকে সক্রিয় রাখতে সাহায্য করে।

বেশি পান করলে আমাদের প্রেসাবের পরিমাণ ও বেড়ে যায় তবে শরীরের হাইড্রেটেড ভালো থাকে।পানির অপর নাম জীবন।নিয়মিত পানি পান করা এটাও একটা অভ্যাসে পরিণত করুন, আপনাকে সুস্থতা রাখার সাথে আপনার অভ্যাসের তালিকায় ও স্থান পেয়ে গেলো।

পর্যাপ্ত ঘুম:

ঘুম মানুষকে রিলাক্স করতে সাহায্যে করে।পর্যাপ্ত ঘুম আমাদের জন্য উপকারি।সারাদিনের টেনশন, পরিশ্রমকে বিশ্রামের জন্য ভালো একটা ঘুম অতি গুরুত্বপূর্ণ।

আরও পড়তে পারেন:

নিজের পথ নিজেকে তৈরি করতে হয়: সাফল্যের জন্য নিজের রাস্তা নিজে তৈরি করুন

শরীর ও মনের সঠিক বিশ্রামের জন্য প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানো অপরিহার্য। পর্যাপ্ত ঘুম আপনার মনোযোগ, মেজাজ এবং কর্মদক্ষতা উন্নত করে। ঘুম ও একটা অভ্যাস আপনি কখন ঘুম থেকে উঠবেন কখন ঘুমাবেন এটা ডেইলি রুটিন এর মধ্যে থাকা উচিত।

ভালো একটা দিন শুরু করতে হলে রাতে ভালো একটা ঘুম প্রয়োজন। ভালো ঘুম মানে মন মেজাজ ভালো থাকা, ভালো ঘুম না হলে আপনার কাজে মন বসবে না ভালো মতো।

নিয়মিত খাবার খাওয়া:

নিয়মিত খাবার খাওয়া সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার একটি গুরুত্বপূর্ণ অভ্যাস।খাবার হলো শরীরের শক্তি উৎস। খাবার আপনাকে পুষ্টি দেয় এবং আপনাকে দিনের কাজের জন্য প্রস্তুত রাখে। খাবারের তালিকা ঠিক রাখা অবশ্যই প্রয়োজন আমাদের। আমরা অনেক সময় কাজের ব্যস্ততায় খাবার খাওয়া এড়িয়ে যাই, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর।

সঠিক সময়ে খাবার খেলে শরীরের শক্তি বজায় থাকে এবং বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতায় সহায়ক হয়।

তিন বেলায় সুষম খাবার খাওয়া যেমন প্রয়োজন, তেমনই খাবারের মধ্যে ফল, সবজি, প্রোটিন, এবং পর্যাপ্ত পানি গ্রহণেরও প্রয়োজন আছে। নিয়মিত খাবার না খাওয়ার ফলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা, ওজন কমে যাওয়ার মতো নানান শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।

খাবার খেলে হবে না, খাবারের গুণগত মান এবং একটা নিদিষ্ট তালিকা থাকতে হবে।প্রতিদিনের খাবারে শাকসবজি, ফল, প্রোটিন এবং কার্বোহাইড্রেটের সঠিক মিশ্রণ রাখা উচিত।

নিজেকে অন্যর সাথে তুলনা না করা:

কখনো নিজেকে অন্যার সাথে তুলনা করবেন না।আপনি যে পজিশনে আছেন ভালো আছেন এটা মাথায় রাখবেন। নিজেকে অন্যার সাথে তুলনা করলে কখনো সামনে এগোতে পারবেন না, সবসময়ই পিছিয়ে থাকবেন। অন্যের সাথে তুলনা করা মানে হলো মানসিক ভাবে নিজেকে একটা পেশার দেওয়া। নিজের আত্মবিশ্বাস কে ভেঙ্গে ফেলা। আপনার পজিটিভ মাইন্ডসেট থাকবে না, আপনার মনে সবসময় চিন্তা আসবে আপনি ওর মতো হতে পারতেছেন না কেন, কি করলে ওর মতো হতে পারবো।

এগুলো ভাবতে ভাবতে নিজের আত্নবিশ্বাসকে হারিয়ে ফেলবেন।প্রত্যেক মানুষ আলাদা। লক্ষ্য লক্ষ্য সেনাবাহিনী মধ্যে একজনই হয় সেনাপ্রধান, সবাই কিন্তু সেনাপ্রধান হতে পারে না তবে সবারই ইচ্ছে থাকে সেনাপ্রধান হওয়ার কিন্তু পারে না। যদি লক্ষ লক্ষ সেনাবাহিনীর সৈনিক বা অফিসার চাইলে কি সেনাপ্রধান হতে পারবে অবশ্যই পারবে না।

নিজেকে অন্যের সাথে তুলনা না করে, নিজে যে পজিশনে আছি সেটা নিয়ে মনোনিবেশ হওয়া জরুরি এবং নিজেকে কি করে আরও উন্নত করা যায় তা নিয়ে ভাবা উচিত।

সময়ের কাজ সময়ে শেষ করা:

আমাদের সবচেয়ে বড় দূর্বলতা হলো আমরা সময়ের কাজ সময় মতো শেষ করতে পারি না। আমরা সময়ের কাজ সময় মতো করতে পারলে আমাদের সাফল্য অনেকটা নিশ্চিত হয়ে যেতো।

কাজ হবে সময় মতো, সময় কি কারও জন্য অপেক্ষা করে। সময় একবার চলে গেলে কিন্তু আর ফিরে পাওয়া যাবে না, সময়ের মূল্য সবাই দিতে জানে না।এমন কোন কাজ করবেন না কোন একদিন মনে না হয়, ওই কাজ যদি ওই সময়ের মধ্যে করতে পারলে আমাদের জীবন কোথায় গিয়ে দাঁড়াতো আজ।

মেডিটেশন করা:

মেডিটেশন আপনার মানসিক চাপ কমিয়ে ফোকাস করার শক্তি তৈরি করে। অনেকে মেডিটেশন এবং ব্যায়ামকে এক মনে করে থাকে আসলে দুইটা দুই রকমের। ব্যায়াম আপনার পেশীকে শক্তিশালি করবে এবং মেডিটেশন আপনাকে ফোকাস ধরে রাখতে সাহায্য করবে।ধ্যান আমাদের জীবনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ

বই পড়া:

পৃথিবীতে সবচেয়ে ভালো অভ্যাস হলো বই পড়া। বই পড়লে আপনার মস্তিষ্ক শান্তি খুঁজে পাবে, আমাদের শরীরের পেশী শক্তিশালী করতে ব্যায়াম যেমন প্রয়োজন, মস্তিষ্ককে শক্তিশালী করতে বই পড়া অতি জুরুরি।

ডেইলি অন্তত ৩০-৪৫ মিনিট বই পড়া উচিত। যে কোন রকমের বই পড়তে পারেন, তবে মোবাইলে বই পড়া থেকে বিরত থাকুন।মোবাইলে বই পড়া চোখের জন্য ভালো দিক না।

সকাল এবং রাতে নিদিষ্ট সময়ে আপনি ভালো বই পড়ার অভ্যাস গঠন করতে পারেন।বই আমাদের জানার ভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করে এবং আমাদের জ্ঞান বাড়াতে সহায়তা করে।

পজিটিভ মানসিকতা:

জীবনে চলতে গেলে অনেক ধরনের সমস্যা সম্মুখীন হতে হয় মানুষের। সমস্যা মানব জীবনের বন্ধু এটাকে আপনি সমস্যা হিসাবে বিবেচনা করবেন না। এটাকে আপনি বন্ধু হিসেবে নিয়ে সবসময় পজিটিভ মাইন্ডসেট থাকুন।

পজিটিভ মাইন্ডসেট আমাদেরকে খারাপ সময়েও ভালো রাখতে সাহায্য করে কারণ আপনার মাইন্ডসেট হচ্ছে এমনই। পজিটিভ চিন্তা আপনাকে হার না মানতে সাহায্যে করবে। আমরা অতি তাড়াতাড়ি হার মেনেনি।যদি আমাদের ভালো চিন্তা ধারা থাকতো তাহলে আমরা হার মানতাম না অতিসহজেই।

আপনার মতামত কমেন্ট করে জানতে পারেন, আপনার মতামত আমাদের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ।আমাদেরকে সোশাল মিডিয়ায় ফলো করতে ভুলবেন না।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *